দূষণের প্রভাব (পাঠ ৯)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বিজ্ঞান প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং দূষণ | - | NCTB BOOK
47
47

তোমরা মাটি, পানি ও বায়ুদূষণ কীভাবে ঘটে তা জেনেছো। তোমরা কী জানো এসব দূষণের ফলে পরিবেশের উপর কোন ধরনের প্রভাব পড়ে?

কাজ: বিভিন্ন দূষণের প্রভাব সম্পর্কে জানা।
পদ্ধতি: শিক্ষকের সহায়তায় দল গঠন কর। দলগুলো তোমাদের বিদ্যালয় এবং এলাকার আশেপাশের পরিবেশ পরিদর্শন করবে। দেখ এলাকার পরিবেশে কোন কোন ধরনের দূষণ ঘটছে। এসব দূষণের ফলে মানুষসহ অন্যান্য জীবের উপর কোন ধরনের প্রভাব পড়ছে তা বিভিন্ন দলের সদস্যদের মধ্যে নিজেরা আলোচনা করে নোট খাতায় লিখ। শ্রেণিতে বিভিন্ন দল থেকে সংগৃহীত তথ্য উপস্থাপন কর এবং শ্রেণিতে আলোচনায় অংশগ্রহণ কর।

মাটিদূষণের প্রভাব

তোমরা জেনেছো, মাটিদূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে মাটিতে বর্জ্যের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। মাটি দূষণের জন্য দায়ী বিভিন্ন কঠিন ও রাসায়নিক বর্জ্য। এসব বর্জ্য যেখানে-সেখানে ফেলার কারণে পরিবেশ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। মাটিতে ফেলে দেওয়া কাচ, অ্যালুমিনিয়াম, পলিথিন ইত্যাদি মাটিতে সহজে মেশে না। ফলে মাটি তার উর্বরতা হারায়। তোমরা জেনে অবাক হবে অ্যালুমিনিয়াম মাটির সাথে মিশতে সময় লাগে আড়াইশত বছর। কাচের লাগে দশ লক্ষ বছর এবং পলিথিনের লাগে প্রায় এক হাজর বছর। তাই এগুলো আমাদের নর্দমা, জলাশয়কে ভরাট করে এবং জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে এগুলো পুকুর, নদী, সাগর এসব স্থানেও স্থানান্তরিত হয়। ফলে এসব পরিবেশে জীবের বেঁচে থাকা হুমকির সম্মুখীন হয়। কৃষি জমিতে যে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় মাটির বিভিন্ন জীবের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া এসব রাসায়নিক দ্রব্য উদ্ভিদের মাধ্যমে খাদ্যের সাথে মিশে ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগের সৃষ্টি করছে।

পানিদূষণের প্রভাব

আমরা বিভিন্নভাবে পানি দূষিত করছি তা তোমরা জেনেছো। এ দূষিত পানি পান করলে আমাশয়, ডায়রিয়া, কলেরা, জন্ডিস, টাইফয়েড ইত্যাদি রোগ হয়। পানি দূষিত হলে সে পানিতে মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীও বাঁচতে পারে না। ফলে পানির পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়।

বায়ুদূষণের প্রভাব

তোমরা জেনেছো বিভিন্নভাবে বায়ু দূষিত হয়। বায়ু দূষিত হলে সে বায়ুতে বিভিন্ন গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। যা মানুষের জন্য ক্ষতিকর। বায়ুতে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে গেলে মানুষের শ্বাসকষ্টজনিত রোগ থেকে শুরু করে ক্যান্সার এর মতো মারাত্মক রোগও হতে পারে। এছাড়াও শিল্পকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া বায়ুতে মিশে গিয়ে অম্ল বা এসিড বৃষ্টির সৃষ্টি হতে পারে। এই অ্যাসিড বৃষ্টি শুধু মানুষের ক্ষতিই করে না, জলজ প্রাণীদেরও ক্ষতি করে এর ফলে বনভূমিও ধ্বংস হয়।

এসব ছাড়াও বায়ুদূষণের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা আগের থেকে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি যদি অব্যাহত থাকে, তবে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। ফলে পৃথিবীর সমুদ্র উপকূলবর্তী নিচু স্থলভূমি পানিতে ডুবে যাবে। আবার কোনো কোনো অঞ্চল খরার কবলে পড়বে। ফলে স্থানীয় জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটবে। এতে শুধু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, অসংখ্য উদ্ভিদ ও প্রাণী পৃথিবী থেকে লুপ্ত হয়ে যাবে। ফলশ্রুতিতে সার্বিকভাবে পৃথিবী ঝুঁকির মুখে পড়বে।

common.content_added_by
টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion